Baaghi 4 movie box office collection: টাইগার শ্রফের নতুন ছবির শুরুটা জোরালো হলেও দ্বিতীয় দিনেই বড় ধাক্কা!

Baaghi 4 movie box office collection Baaghi 4 movie box office collection

বলিউডে অ্যাকশন মানেই টাইগার শ্রফের নাম প্রথম সারিতেই আসে। গত এক দশকে তিনি তাঁর অনন্য স্টান্ট, নাচ এবং অ্যাকশন সিকোয়েন্স দিয়ে এক বিশেষ জায়গা তৈরি করেছেন। তাঁর সুপারহিট ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘বাঘি’ সিরিজ এর আগের তিনটি কিস্তিই বক্স অফিসে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এনে দিয়েছে। তাই দর্শকদের প্রত্যাশা ছিল চতুর্থ কিস্তি ‘বাঘি ৪’ নিয়েও।

৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। প্রথম দিনই ছবি সংগ্রহ করে প্রায় ১২ কোটি টাকা নেট কালেকশন। বিশ্বব্যাপী আয় মিলে দুই দিনের মধ্যেই ২০ কোটির গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছে। তবে আশার মাঝেই রয়েছে এক বড় হতাশার ছবি—দ্বিতীয় দিনেই ছবির আয় প্রায় ২৫% কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৯ কোটি টাকায়

প্রথম দিনের ঝলক: ভরসা জাগিয়েছিল ওপেনিং Baaghi 4 movie box office collection

প্রথম দিনের বক্স অফিস কালেকশন একেবারেই খারাপ বলা যায় না। প্রায় ১২ কোটি টাকার ওপেনিংয়ে বলিউডে ছবির দাপট স্পষ্ট হয়েছিল। মাল্টিপ্লেক্স থেকে সিঙ্গল স্ক্রিন—সবখানেই টাইগারের ফ্যানদের ভিড় চোখে পড়েছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম ও অ্যাকশনপ্রেমী দর্শকেরাই প্রথম দিন ছবিটি দেখতে ছুটে গিয়েছিলেন।

প্রথম দিনের এই আয় দেখে ট্রেড অ্যানালিস্টরা আশা করেছিলেন যে ছবিটি প্রথম সপ্তাহান্তেই ৪০–৫০ কোটির দৌড়ে পৌঁছে যাবে। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিল দ্বিতীয় দিনের রিপোর্ট।

দ্বিতীয় দিনের ধাক্কা: ২২–২৫% কমল কালেকশন

শনিবার সাধারণত বক্স অফিসের জন্য শুভ দিন। কর্মব্যস্ততা থেকে মুক্ত হয়ে দর্শকরা সিনেমা দেখতে প্রেক্ষাগৃহে ভিড় জমান। কিন্তু ‘বাঘি ৪’-এর ক্ষেত্রে ঠিক উল্টোটাই ঘটেছে।

দ্বিতীয় দিনে ছবির আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯ কোটি টাকা নেট, যা প্রথম দিনের তুলনায় ২৫% কম। অর্থাৎ দুই দিনের মোট কালেকশন দাঁড়াল প্রায় ২১–২১.২৫ কোটি টাকা

এমনটা হওয়ায় বলিউড ট্রেড মহলে চিন্তার সুর শোনা যাচ্ছে। কারণ ওপেনিং ভালো হলেও দ্বিতীয় দিনের বড় পতন ইঙ্গিত দেয় যে দর্শকদের মুখে মুখে প্রশংসা জমছে না।

দর্শক সংখ্যা ও শো-অকুপেন্সি: কোথায় কম পড়ল? Baaghi 4 movie box office collection

সিনেমার শো-অকুপেন্সি বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায় সমস্যা কোথায়।

  • মর্নিং শো: মাত্র ৯.৬% আসন ভর্তি হয়েছিল।
  • আফটারনুন শো: প্রায় ২১% দর্শক উপস্থিতি।
  • ইভনিং শো: কিছুটা উন্নতি, ২৫.৬%।
  • নাইট শো: সবচেয়ে বেশি ভিড়, প্রায় ৩৯%।

দিনভর গড় হিসেব করলে হিন্দি শো-গুলির মোট অকুপেন্সি দাঁড়িয়েছে ২৩.৭৯%

অর্থাৎ সকালের শো-গুলোতে প্রায় খালি আসন পড়ে থেকেছে। ধীরে ধীরে দুপুর ও রাতে দর্শক বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু সামগ্রিকভাবে সংখ্যাটা প্রত্যাশার তুলনায় অনেকটাই কম।

প্রতিযোগিতার ভিড়ে চাপা পড়ল টাইগারের ঝলক

‘বাঘি ৪’-এর বক্স অফিস সংগ্রহ কমে যাওয়ার পেছনে অন্যতম বড় কারণ প্রতিযোগিতা

🔹 একই দিনে মুক্তি পেয়েছে হলিউডের হরর ছবি ‘The Conjuring: Last Rites’। ছবিটি প্রথম দিনেই ভারতের বাজারে প্রায় ১৭.৫ কোটি টাকা আয় করেছে এবং দ্বিতীয় দিনেও সমানভাবে ধরে রেখেছে সেই গতি। ফলে বলিউডের মূলধারার অ্যাকশন ছবির দর্শক টেনে নিয়েছে এই হরর ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন কিস্তি।

🔹 এর পাশাপাশি মুক্তি পেয়েছে বিবেক অগ্নিহোত্রীর রাজনৈতিক ছবি ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’। যদিও এর স্কেল ছোট, কিন্তু দর্শকদের একটা নির্দিষ্ট অংশ এই ছবির দিকে ঝুঁকেছে। দ্বিতীয় দিনে ছবিটির আয় সামান্য বেড়েছে, প্রায় ৪ কোটি টাকা পৌঁছেছে।

🔹 দক্ষিণী বাজারে সিভাকার্তিকেয়ানের ‘মাধরাসি’ ছবিটিও জোরালো ওপেনিং করেছে। প্রথম দিনেই প্রায় ১৩ কোটি টাকার কালেকশন করে ফেলেছে, যা টাইগারের ছবিকেও পেছনে ফেলেছে।

এই প্রতিযোগিতার চাপে ‘বাঘি ৪’-এর প্রভাব অনেকটাই কমে গেছে।

সমালোচনা ও দর্শক প্রতিক্রিয়া

ছবির পতনের আরেকটা বড় কারণ মিশ্র প্রতিক্রিয়া

সমালোচকদের মতে, ছবিতে অ্যাকশন সিকোয়েন্স যতটা দুর্দান্ত, গল্প ততটাই দুর্বল। চরিত্রের আবেগ, সংলাপ কিংবা কাহিনির গভীরতা দর্শকদের মন ছুঁতে পারেনি।

অন্যদিকে দর্শকরা বলছেন, ছবিটি আসলে পুরনো ধাঁচের অ্যাকশন রেসিপি ছাড়া আর কিছু নয়। যারা টাইগারের ফ্যান, তারা ছবিটি উপভোগ করছেন ঠিকই, কিন্তু সাধারণ দর্শকদের মধ্যে আগ্রহ কম।

আগের বাঘি সিরিজের সঙ্গে তুলনা

ফ্র্যাঞ্চাইজির আগের তিনটি ছবির সঙ্গে তুলনা করলে ‘বাঘি ৪’-এর দুর্বলতা আরও পরিষ্কার হয়।

  • বাঘি (২০১৬): প্রথম ছবিটি নতুনত্বের জোরে দর্শকদের ভীষণ টেনেছিল। ওপেনিং সপ্তাহান্তেই বড় আয় করেছিল।
  • বাঘি ২ (২০১৮): এটি ছিল সুপারহিট। ওপেনিং ডে-তেই ২৫ কোটির বেশি আয় করেছিল।
  • বাঘি ৩ (২০২০): করোনার আগে মুক্তি পেলেও প্রথম দিনেই ১৭ কোটির কাছাকাছি সংগ্রহ করে ফেলেছিল।

তুলনায় বাঘি ৪-এর ওপেনিং অনেকটাই দুর্বল।

সামনে কী হতে পারে?

দ্বিতীয় দিনের পর বাঘি ৪-এর সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হল সপ্তাহান্ত রক্ষা করা। রবিবারে যদি কালেকশন কিছুটা বাড়ে, তাহলে ছবিটি প্রথম সপ্তাহে ৩০–৩৫ কোটি টাকার আশেপাশে পৌঁছতে পারে।

তবে যদি পতন চলতেই থাকে, তাহলে ছবিটি বক্স অফিসে কড়া ধাক্কা খাবে।

অন্যদিকে ইতিবাচক দিকও আছে। টাইগার শ্রফের ফ্যানবেস এখনও শক্তিশালী। ছবির অ্যাকশন সিকোয়েন্স ও গান ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যদি মুখে মুখে প্রশংসা কিছুটা বাড়ে, তবে মাঝপথে ছবির ভাগ্য ঘুরতেও পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *