East bengal vs Mohun bagan: দুরন্ত জয়ে মোহনবাগানকে হারাল ইস্টবেঙ্গল

কলকাতার ফুটবলপ্রেমীদের কাছে ডার্বি মানেই আবেগ, ইতিহাস আর গর্ব। সেই আবেগই ফের উথলে উঠল দুর্গাপুজোর আগেই, যখন দুরন্ত খেলায় ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে হারিয়ে দিল ডুরান্ড কাপ ২০২৫-এর কোয়ার্টার ফাইনালে। গ্রিসের স্ট্রাইকার দিয়োনিসিয়স দিয়ামান্টাকোস খেললেন ম্যাচ জুড়ে নায়কোচিত ভুমিকা। তাঁর জোড়া গোলেই লাল-হলুদ শিবিরে ফের একবার জয়রথের ধ্বনি বাজল।

ম্যাচের শুরুতেই উত্তেজনা East bengal vs Mohun bagan

প্রথম থেকেই দুই দলের খেলোয়াড়রা আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। ম্যাচের প্রেক্ষাপটই ছিল ভিন্ন। একদিকে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান, অন্যদিকে নতুন রূপে গড়া ইস্টবেঙ্গল। সমর্থকরা মাঠে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে গ্যালারির পরিবেশ হয়ে ওঠে উৎসবমুখর। ঢাক, করতাল, স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো স্টেডিয়াম।

দিয়ামান্টাকোসের জোড়া গোল

ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে নামার পর থেকেই দিয়ামান্টাকোস চিরাচরিত দক্ষতা দেখিয়েছেন। এদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রথমার্ধেই তিনি অসাধারণ এক গোল করে লাল-হলুদ সমর্থকদের উল্লাসে ভাসিয়ে দেন। দ্বিতীয়ার্ধে আরও একবার গোল করে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন তিনি। তাঁর নিখুঁত ফিনিশিং দক্ষতা আবারও প্রমাণ করল কেন তাঁকে ইউরোপ থেকে আনা হয়েছে।

মোহনবাগানের লড়াই East bengal vs Mohun bagan

হারলেও মোহনবাগান কিন্তু শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেছে। রয় কৃষ্ণা, মনবীর সিংহদের চেষ্টায় বারবার ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্সে চাপ সৃষ্টি হয়। তবে গোলকিপার প্রণয় হালদার অসাধারণ সেভ করে দলকে রক্ষা করেন। মোহনবাগান কয়েকটি সোনার সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি, যা শেষ পর্যন্ত তাদের জন্য ম্যাচ হারার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সমর্থকদের আবেগ

কলকাতা ডার্বি মানেই সমর্থকদের যুদ্ধক্ষেত্র। একদিকে সবুজ-মেরুন, অন্যদিকে লাল-হলুদ। এদিনও ব্যতিক্রম হয়নি। গ্যালারির প্রতিটি মুহূর্তে ছিল আবেগের উচ্ছ্বাস, পতাকার ঢেউ আর গান। ইস্টবেঙ্গলের জয় নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমর্থকেরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে। অন্যদিকে মোহনবাগান সমর্থকেরা হতাশ হলেও, তারা জানে ডার্বি মানেই পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি।

ডুরান্ড কাপে ইস্টবেঙ্গলের অগ্রযাত্রা

এই জয়ের ফলে ইস্টবেঙ্গল ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে প্রবেশ করল। দল এখন আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর। কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাত জানিয়ে দিয়েছেন, “এই জয় শুধু একটি ম্যাচ নয়, এটা আমাদের দলের আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। সামনে আরও কঠিন ম্যাচ আছে, তবে ছেলেরা প্রস্তুত।”

কলকাতার ফুটবলের গুরুত্ব

ডুরান্ড কাপ শুধু একটি টুর্নামেন্ট নয়, এটা ভারতের ফুটবল ঐতিহ্যের অন্যতম অধ্যায়। আর কলকাতা ডার্বি সেই ঐতিহ্যের হৃদস্পন্দন। ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু খেলার মাঠে সীমাবদ্ধ নয়, এটা বাঙালির সংস্কৃতি, ইতিহাস আর আত্মপরিচয়ের সঙ্গে জড়িত।

ডুরান্ড কাপ ২০২৫-এর এই ডার্বি ম্যাচ আবারও প্রমাণ করল, কেন কলকাতার ফুটবলকে আলাদা করে দেখা হয়। দিয়ামান্টাকোসের দুরন্ত জোড়া গোল, মোহনবাগানের লড়াই এবং সমর্থকদের অগাধ আবেগ – সব মিলিয়ে এই ম্যাচ এক স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের জন্য এই জয় এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, আর মোহনবাগানের জন্য শিক্ষা – সামনে আরও শক্তিশালী হয়ে ফেরার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *